ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে আমার মনে হয় শিকড়ে ফিরে যাবার সময় এসেছে। প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক পড়াশোনার পরিবর্তে ‘শিক্ষককেন্দ্রিক’ পড়াশোনা ধর্মীয় বিদ্যার্জনের জন্য সবদিক থেকে উত্তম।

সাধারণ্যের জন্য আবশ্যিক ধর্মীয় শিক্ষার নানা প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে, কিন্তু যারা ধর্মবেত্তা হবেন, তাদের জন্য গুরুমুখী জ্ঞানার্জনের বিকল্প কখনো মাদরাসা বা প্রতিষ্ঠান হতে পারে না। প্রতিষ্ঠানের অনেক বিধি-নিষেধ থাকে। যার ফলে একজন যোগ্য ও দরদী শিক্ষক তার ছাত্রদের ধর্ম ও জ্ঞানের সমন্বয়ে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারেন না। আবার ছাত্ররাও যোগ্য শিক্ষকের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে, প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে সবখানেই ধর্মীয় শিক্ষার মধ্যে অনেক গোঁজামিল চলে আসে। যেটা আমাদের দেশে বিগত এক শ বছর ধরে ধীরে ধীরে প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।

একারণে মধ্যযুগের মুহাদ্দিসকেন্দ্রিক যে ধর্মীয় পড়াশোনা, বা খানকাহকেন্দ্রিক যে ইলম অর্জন, এটা এখন অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

যারা এমন যোগ্যতর শিক্ষক আছেন, নিজেরাই একা দশজন বা বিশজন বাছাই করা ছাত্রকে কায়েদা থেকে নিয়ে ফতোয়ায়ে আলমগিরি পর্যন্ত পড়াতে পারবেন, তারা এ পদ্ধতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন। আমি বলি, করা উচিত। আমাদের ধর্মীয় শিক্ষার মূল ওটাই, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়।

প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মীয় শিক্ষা আপৎকালীন একটা সময়ে প্রবর্তন করা হয়েছিল, তখন সেটাই প্রয়োজনীয় ছিল। এখন যুগের প্রয়োজনে আবার শিকড়ের দিকে ফিরে যাওয়া উচিত। নইলে ধর্মীয় শিক্ষার মূল চেতনা ক্রমেই বিলীন হয়ে কেবল কংকাল রয়ে যাবে।